প্রাকৃতিক ভিটামিন ট্যাবলেট কাজুবাদাম

অর্ডার করুন আপনার পছন্দের খাবার...

দৈনিক মাত্র ৩-৪ টি করে কাজুবাদাম খান বড় বড় রোগের হাত থেকে রেহাই পান

প্রথমে বলতে চাই যে, যত ধরনের খাবার আছে, তার মধ্যে বাদাম অত্যন্ত পুষ্টিকর বা ভিটামিন যুক্ত খাবার। এটি খেতেও বেশ সুস্বাদু।আমরা যদি নিয়মিত বাদাম খাই তাহলে আমাদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি পেয়ে বিভিন্ন রোগের হাত থেকে আমরা রক্ষা পেতে পারি। বাদাম থেকে উপকার কমবেশি একই ধরনের। সব বাদামেই সব ধরনের উপাদান থাকলেও কিছু উপাদানের পরিমাণে খানিকটা কমবেশি হতে দেখা যায়। এর মধ্যে কাজুবাদাম পুষ্টি গুনে অন্যতম ।

Cashews Nuts iEatery Online Food

ঘরে বসে ফুড অর্ডার করতে চাইলে এখনি আমাদের মোবাইল অ্যাপ ইনস্টল করুন...

কাজুবাদামের ইতিহাস

কাজুবাদামের উৎপত্তিস্থল ব্রাজিল। আমাদের দেশে এই বিশেষ বাদামটির চাষ হয় না বলেই চলে। ১৪৯৮ সালে ভাস্কো দা গামার হাত ধরে উপমহাদেশে আগমন ঘটে কাজু বাদামের। তারপর থেকে ছড়িয়ে পড়ে এর স্বাদের সুখ্যাতি। এখন তো দক্ষিণ আমেরিকা এবং আফ্রিকা মহাদেশের একাধিক দেশে এই বাদামটির চাষ হয়ে থাকে। বর্তমানে প্রধানত ইন্দোনেশিয়া, মালয়েশিয়া, ভারত, কেনিয়া, মোজাম্বিক, তানজানিয়া, মাদাগাস্কার প্রভৃতি দেশে কাজুবাদাম উৎপাদিত হয়ে থাকে।

বাংলাদেশে কাজুবাদাম

খাগড়াছড়ির পাহাড়ি কৃষি গবেষণা কেন্দ্র, হর্টিকালচার সেন্টার খেজুরবাগান, সেনানিবাস, হর্টিকালচার সেন্টার নারানখাইয়া, পানখাইয়া পাড়া, কমলছড়ি ও জামতলী এলাকায় কাজুবাদামের গাছ চোখে পড়ে। এ ছাড়া, রামগড় উপজেলার হর্টিকালচার সেন্টারেও রয়েছে কাজুবাদামের বাগান। পার্বত্য চট্টগ্রামে কাজুবাদাম চাষ সম্প্রসারণের উজ্জ্বল সম্ভাবনা রয়েছে। বর্তমানে পার্বত্য চট্টগ্রামে মাঝারি আকারে কাজুবাদামের চাষ হচ্ছে। অনাবাদি জমিতে পরিকল্পিতভাবে কাজুবাদাম চাষের যথেষ্ট সুযোগ আছে। ভবিষ্যতে খাগড়াছড়ির কৃষিপণ্যের মধ্যে কাজুবাদামও একটি বিশেষ স্থান করে নিতে পারে।

কাজুবাদামের উপকারিতা

পুষ্টিগুণ এবং শরীরিক উপকারিতার দিক থেকে কাজু বাদামের কোনও বিকল্প হয় না বললেই চলে। এতে উপস্থিত প্রোটিন, অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, খনিজ এবং ভিটামিন নানা ভাবে শরীরের উপকারে লেগে থাকে। শুধু তাই নয়, কাজু বাদামে ভিটামিনের মাত্রা এত বেশি থাকে যে চিকিৎসকেরা একে প্রকৃতিক ভিটামিন ট্যাবলেট নামেও ডেকে থাকেন। 

প্রতি ১০০ গ্রাম কাজুবাদামে ৩০.১৯ গ্রাম শর্করা, ১৮.২২ গ্রাম আমিষ, ৪৩.৮৫ গ্রাম চর্বি থাকে। কাজুবাদামে বিভিন্ন ভিটামিন, লৌহ, ক্যালসিয়াম, ম্যাগনেশিয়াম, ফসফরাস, পটাশিয়াম, জিঙ্ক খনিজ উপাদান রয়েছে।

একাধিক গবেষণায় দেখা গেছে, নিয়মিত যদি ৩-৪ টি কাজু বাদাম খাওয়া যায়, তাহলে শরীরে নান পুষ্টিকর উপাদানের ঘাটতি দূর হয়, সেই সঙ্গে আরও কিছু উপকার পাওয়া যায়। যেমন -

১. ব্লাড প্রেসার নিয়ন্ত্রণে থাকে
মাঝে মধ্যেই কি রক্তচাপ গ্রাফের কাঁটার মতো ওঠা-নামা করে? তাহলে তো চটজলদি কাজু খাওয়া শুরু করতে হবে। কারণ এই বাদামে রয়েছে ম্যাগনেসিয়াম, যা ব্লাড প্রেসারকে নিয়ন্ত্রণে রাখতে বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে।

২. কলেস্টেরল কমাতে

কাজুবাদাম এর ভালো দিক হল এতে ভালো ফ্যাট থাকে এবং এই বাদামে কোন কোলেস্টেরল থাকে না। এছাড়া এই বাদাম খারাপ কোলেস্টরেলের পরিমাণ কমাতে সাহায্য করে। অনেকেই মনে মনে করেন যে চর্বি গ্রহণ করাটা শরীরের জন্য খারাপ কিন্তু এই কথাটা সব সময় সত্যি নয়। আমাদের দেহের জন্য অবশ্যই চর্বির দরকার রয়েছে। তবে ভালো উৎস থেকে এই চর্বি গ্রহণ করতে হবে। ফ্যাটের একটি ভালো উৎস হল এই কাজুবাদাম। অধি কিন্তু এই কাজ হতে এক ধরনের এসিড থাকে যা হার্টের জন্য খুব উপকারী। এই এসিডটির নাম হল ওলেইক অ্যাসিড।

 

৩. হার্টের স্বাস্থ্যের উন্নতি ঘটে
কাজু বাদামে উপস্থিত অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট একদিকে যেমন ক্যান্সার রোগকে দূরে রাখে, তেমনি নানাবিধ হার্টের রোগ থেকে বাঁচাতেও বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে। তাই যাদের পরিবারে হার্ট ডিজিজের ইতিহাস রয়েছে, তারা প্রয়োজন মনে করলে এই প্রাকৃতিক উপাদানটির সঙ্গে বন্ধুত্ব পাতাতেই পারেন।

 

৪. ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে

কাজু বাদাম আমাদের দেহে রক্তে সুগারের পরিমাণ নিয়ন্ত্রণ করে ও ডায়াবেটিস সংক্রান্ত স্বাস্থ্য ঝুঁকি কমিয়ে তোলে। কাজু বাদামে উপস্থিত উপকারী ফ্যাটস, ভিটামিন, মিনারেলস শরীরের গ্লুকোজের ভারসাম্য রক্ষা করে। তাই ব্লাড সুগার লেভেল নিয়ন্ত্রনে রাখতে প্রতিদিন খাবার খাওয়ার আগজে ৩-৪ টি করে কাজু বাদাম খাওয়া বাঞ্ছনীয়।

৫. ওজন কমাতে
যাঁরা ওজন কমাতে চান, তাঁরা চর্বি ও প্রোটিন জাতীয় অন্যান্য খাবার বাদ দিয়ে কাজু বাদাম খেতে পারেন। কাজু বাদামে যে প্রোটিন আছে, তা চর্বির পরিমাণ কমিয়ে ওজন ঠিক রাখতে সাহায্য করে।

৬. ক্যান্সারের মতো মরণ রোগ দূরে থাকে
এই মরণ রোগটি যদি সাপ হয়,তাহলে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট হল বেজি। তাই তো যেখানে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট থাকে, সেখানে ক্যান্সার সেলের খোঁজ পাওয়া কঠিন হয়ে দাঁড়ায়। তাই তো প্রতিদিন এক মুঠো করে কাজু বাদাম খাওয়ার পরামর্শ দিয়ে থাকেন চিকিৎসকেরা। আসলে এই বাদমটির শরীরে রয়েছে প্রচুর মাত্রায় অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, যা ক্যান্সার সেলের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ ব্যবস্থা গড়ে তোলার পাশাপাশি টিউমার যাতে দেখা না দেয় সেদিকেও খেয়াল রাখে। প্রসঙ্গত, কাজু বাদামে থাকা প্রম্যান্থোসায়ানিডিন নামে একটি উপাদান এক্ষেত্রে বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে।

৭. ব্রেইন পাওয়ার বাড়াতে

কাজু বাদাম আপনার ব্রেইনের জন্য একটি অন্যতম সেরা খাদ্য। কাজু বাদামের ভিটামিন ই আপনার ব্রেইনের কার্যক্রম সঠিক রাখতে ও স্মরণশক্তি বাড়াতে খুব সাহায্য করে। এছাড়া বাদামের জিঙ্ক উপাদান ও মিনারেল ব্রেইনের সেল ড্যামেজ থেকে রক্ষা করে। তাই নিজের স্মরণশক্তি বাড়াতে ও ব্রেইনকে শার্প রাখতে প্রতিদিন একমুঠো কাজু বাদাম গ্রহণ করুন।

৮. মুখ গহ্বরে উপস্থিত নানা রোগের প্রকোপ কমে
কাজুতে উপস্থিত ফসফরাস, দাঁতের স্বাস্থ্যের উন্নতি ঘটানোর মধ্যে দিয়ে নানাবিধ মুখগহ্বর সম্পর্কিত রোগকে দূরে রাখতে বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে। তাই দাঁতকে শক্তপোক্ত এবং সুন্দর রাখার ইচ্ছা যদি থাকে, তাহলে প্রতিদিন কাজু খেতে ভুলবেন না যেন!

৯. অ্যানিমিয়ার মতো রোগের প্রকোপ কমে
একাধিক গবেষণায় দেখা গেছে, কাজু খাওয়া মাত্র দেহের ভেতরে আয়রনের ঘাটতি দূর হতে শুরু করে। ফলে লোহিত রক্ত কণিকার উৎপাদন এত মাত্রায় বেড়ে যায় যে অ্যানিমিয়ার মতো রোগ ধারে কাছেও ঘেঁষতে পারে না। সেই সঙ্গে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতার উন্নতি ঘটতেও সময় লাগে না।

১০. চুলের সৌন্দর্য বৃদ্ধি পায়
কপার হল সেই খনিজ, যা চুলের ঔজ্জ্বল্য বাড়ানোর পাশাপাশি চুলের গোড়াকে শক্তপোক্ত করতে বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে। আর এই উপাদানটি প্রচুর পরিমাণে রয়েছে কাজুতে। এবার নিশ্চয় বুঝতে পেরেছেন কিভাবে কাজু চুলের সৌন্দর্য বাড়িয়ে থাকে। তবে এখানেই শেষ নয়, কাজু বাদামে থাকা কপার শরীরের ভেতরে এমন কিছু এনজাইমের ক্ষরণ বাড়িয়ে দেয়, যা চুলের কালো রংকে ধরে রাখতে বিশেষ ভূমিকা নেয়।

১১. শক্তিশালী হাড় গঠনে

কাজু বাদামের শক্তিশালী ক্যালসিয়াম ও ফসফরাস উপাদান আপনার শরীরের হাড়ের সুষ্ঠু গঠন নিশ্চিত করে। মজবুত আর শক্তিশালী হাড় গঠনে কাজু বাদামের সাথে অন্য কিছুর তুলনা হয়না। এছাড়া উষ্ণ বাদাম তেলের মালিশ আপনার বাচ্চার দেহের হাড় মজবুত করতে অগ্রণী ভূমিকা রাখে।

১২.রক্তরোগ দূর করে
পরিমিত মাত্রায় কাজু বাদাম খেলে রক্তস্বল্পতা দূর হয়। কাজু বাদামে কপার বা তামা থাকে, যা রক্তরোগ দূর করে। রক্তে কপারের অভাব হলে লৌহ স্বল্পতাও দেখা দিতে পারে, যা রক্তশূন্যতা সৃষ্টি করে। কাজু বাদাম খেলে সমস্যা দূর হয় ।

১৩.চোখের জ্যোতি বাড়ায়
কাজুতে প্রচুর পরিমাণে লুটেন ও জিয়াক্সাথিন অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট থাকে, যা চোখকে আলোক রশ্মির ক্ষতিকর প্রভাব থেকে রক্ষা করে। চোখে ছানি পড়ার হাত থেকে রক্ষা করতে পারে কাজু বাদাম।

১৪.সংক্রমণের আশঙ্কা কমায়
এই প্রকৃতিক উপাদানটিতে থাকা জিঙ্ক, ভাইরাসের আক্রমণের হাত থেকে শরীরকে রক্ষা করে। তাই আপনি যদি এই ধরনের ইনফেকশনের শিকার প্রায়শই হয়ে থাকেন, তাহলে রোজের ডায়েটে কাজু বাদামের অন্তর্ভুক্তি ঘটাতেই পারেন।

১৫.রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণে থাকে

বাদামে থাকা ম্যাগনেসিয়াম রক্তে উপস্থিত শর্করার মাত্রাকে নিয়ন্ত্রণে রাখতে সাহায্য করে। সেই কারণেই তো ডায়াবেটিকদের নিয়মিত বাদাম খাওয়ার পরামর্শ দিয়ে থাকেন চিকিৎসকেরা। প্রসঙ্গত, সম্প্রতি প্রকাশিত এক গবেষণায় দেখা গেছে নিয়মিত বাদাম খাওয়ার অভ্যাস করলে টাইপ-২ ডায়াবেটিসে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা প্রায় ২৫-৩৮ শতাংশ কমে যায়। তাই যাদের পরিবারে এই মারণ রোগের ইতিহাস রয়েছে, তারা সময় থাকতে বাদামকে কাজে লাগাতে শুরু করে দিন। দেখবেন উপকার মিলবে।

১৬. কোষেদের ক্ষমতা বৃদ্ধি পায়

বাদামে উপস্থিত প্রচুর মাত্রায় ভিটামিন ই শরীরের প্রতিটি কোণায় ছড়িয়ে থাকা কোষেদের কর্মক্ষমতার বৃদ্ধি ঘটানোর সঙ্গে সঙ্গে তাদের শরীরে যাতে কোনও ভাবে ক্ষতের সৃষ্টি না হয়, সেদিকেও খেয়াল রাখে। ফলে বয়স বাড়লেও শরীরের উপর তার কোনও প্রভাব পরে না।

১৭. হজম ক্ষমতার উন্নতি ঘটে

বেশ কিছু গবেষণায় দেখা গেছে নিয়মিত জলে ভেজানো কাজুবাদাম খেলে দেহের অন্দরে বিশেষ কিছু এনজাইমের ক্ষরণ বেড়ে যায়, যার প্রভাবে হজম ক্ষমতার উন্নতি ঘটতে শুরু করে। সেই সঙ্গে গ্যাস-অম্বলের প্রকোপও কমে যায়। এবার বুঝেছেন তো খাদ্যরসিক বাঙালি, আমাদের কেন প্রতিদিন একমুঠো করে বাদাম খাওয়া উচিত!

 

একাধিক গবেষণায় দেখা গেছে, নিয়মিত যদি কাজু বাদাম খাওয়া যায়, তাহলে শরীরে নান পুষ্টিকর উপাদানের ঘাটতি দূর হয়, সেই সঙ্গে আরও কিছু উপকার পাওয়া যায়।